গরমে ঘামাচি আর ঘামের দানা নিয়ে অতিষ্ঠ? জেনে নিন প্রতিকারের পরীক্ষিত ঘরোয়া উপায় ও ডাক্তারি পরামর্শ
ঘামের দানা ও ঘামাচি – গরমে ত্বকের যন্ত্রণার শেষ কোথায়?
ঘামের দানা বা ঘামাচি আসলে কেন হয়? (সায়েন্সটা একটু জানি)
মিথ বনাম বাস্তবতা (Myths vs Facts)
মিথ: "ঘামাচি হলে বেশি করে ট্যালকম পাউডার মাখতে হবে।" বাস্তবতা: ভুল! পাউডার সাময়িক আরাম দিলেও এটি ঘাম এবং তেলের সাথে মিশে লোমকূপ আরও বাজেভাবে বন্ধ করে দেয়। এতে সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি থাকে।
মিথ: "ঘাম হওয়া ভালো, এতে শরীর ডিটক্স হয়।" বাস্তবতা: ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, এটা ঠিক। কিন্তু সেই ঘাম যদি দীর্ঘক্ষণ ত্বকে লেগে থাকে, তবে তা ব্যাকটেরিয়ার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়। ঘাম হওয়া সমস্যা না, ঘাম জমে থাকাটাই সমস্যা।
মিথ: "রোদে গেলে ঘামাচি বাড়ে।" বাস্তবতা: শুধু রোদ নয়, ছায়াতে থেকেও যদি আপনি গরমে ঘামেন এবং বাতাস না লাগে, তবুও ঘামাচি হতে পারে।
ধাপ ১: ঘরোয়া প্রতিকার (আগে হাতের কাছের সমাধান)
ব্যবহার: এক মুঠো নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে ২ কাপ পানিতে ফুটিয়ে নিন। পানি সবুজ হয়ে ১ কাপে নেমে আসলে নামিয়ে ঠান্ডা করুন। গোসলের পর এই পানি তুলায় ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। অথবা নিম পাতা বেটে সরাসরি প্যাক হিসেবে লাগাতে পারেন (তবে বেশিক্ষণ রাখবেন না, ত্বক ড্রাই হতে পারে)।
ব্যবহার: শসা গ্রেট করে রস বের করে নিন। এর সাথে ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। বাইরে থেকে এসে মুখ ধুয়ে এই ঠান্ডা মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। জ্বালাপোড়া মুহূর্তেই কমে যাবে।
ব্যবহার: সপ্তাহে ২-৩ দিন মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে লাগান। এটি অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং লোমকূপ পরিষ্কার রাখে।
ধাপ ২: লাইফস্টাইল পরিবর্তন (যেগুলো না করলেই নয়)
পোশাক নির্বাচন: গরমের দিনে সুতির হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। সিন্থেটিক, জর্জেট বা সিল্কের কাপড় ঘাম শুষতে পারে না। অন্তর্বাস বা ইনার-ওয়্যার যেন অবশ্যই সুতির হয় এবং প্রতিদিন ধোয়া হয়। গোসলের নিয়ম: দিনে অন্তত দুইবার গোসল করুন। স্কুল বা অফিস থেকে ফিরে ঘাম শরীরে শুকাতে দেবেন না। গোসলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সাবান (যেমন নিম সাবান) ব্যবহার করতে পারেন, তবে খুব কড়া সুগন্ধিযুক্ত সাবান এড়িয়ে চলাই ভালো। বিছানার চাদর: প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বিছানার চাদর ও বালিশের কভার গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বালিশে জমে থাকা তেল ও ঘাম থেকে মুখে দানা ওঠে। ডায়েট: ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত ঝাল ও তেল চর্বিযুক্ত খাবার শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গরমে লাউ, পেঁপে, ডাবের পানি এবং লেবুর শরবত বেশি করে খান।
ধাপ ৩: কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন এবং মেডিকেল ট্রিটমেন্ট
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড (Salicylic Acid): যদি ঘামের দানা বা একনি হয়, তবে স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত ফেসওয়াশ বা টোনার ব্যবহার করতে পারেন। এটি লোমকূপের ভেতরের ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ক্যালামাইন লোশন: ঘামাচির চুলকানি কমাতে ক্যালামাইন লোশন খুব নিরাপদ এবং কার্যকর। এটি ত্বককে শুষ্ক ও ঠান্ডা রাখে। অ্যান্টি-ফাঙ্গাল শ্যাম্পু: যদি দেখেন দানাগুলো কপালে এবং হেয়ারলাইনের কাছে বেশি হচ্ছে, তবে কেটোকোনাজল (Ketoconazole) যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করে দেখতে পারেন। অনেক সময় মাথার খুশকি বা ফাঙ্গাস থেকে মুখে দানা ছড়ায়।
বাচ্চাদের ঘামাচি ও যত্ন
কখনোই ভারী তেল বা লোশন মাখাবেন না। সবসময় ফ্যানের নিচে বা খোলামেলা জায়গায় রাখুন। নখ ছোট রাখুন যাতে চুলকে ঘা না করে ফেলে।
উপসংহার
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *




.webp)
 (1080 x 1080 px).webp)
.webp)
.webp)
.webp)